ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার তোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ও একই স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষিকা আসমা খাতুনকে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্কুল কমিটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে তাদের এই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাশিম মিয়া। তবে স্থানীয়রা ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবী জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাশিম মিয়ার স্বাক্ষরিত পত্র থেকে জানা যায়,অভিযুক্ত শিক্ষক এবং শিক্ষিকার অনৈতিক সম্পর্কের কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় কমিটির অধিকাংশ সদস্যের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই দুইজনকে আগামী দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তবে পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা সেসংক্রান্ত কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
জানাযায়, গত ১৫ জানুয়ারি তোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ও শিক্ষিকা আসমা খাতুনের ফেইসবুক মেসেঞ্জারের অশ্লীল কথোপকথনের স্ক্রিনশট সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়। ম্যসেঞ্জারের অশ্লীল চ্যাট এর বিষয় সামনে আসার পরে বোঝা যায় শিক্ষক আমিরুল ও শিক্ষিকা আসমার মধ্যে দীর্ঘদিন পরকীয়া চলে আসছে। তাদের মোবাইল চ্যাটিং এ আরো বোঝা যায় যে তারা একে অপরের শরীর দেখা দেখিও করে এবং কোন এক আত্মীয়দের বাসায় যেয়ে নিজেদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক করার পরিকল্পনাও তারা করেন।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক আমিরুল ইসলাম বলেন,আমি ফেইসবুক সম্পর্কে ভালো বুঝিনা। কেউ আমার আইডি হ্যাক করে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এসব কাজ করেছে।
এদিকে তাদের অশ্লীল চ্যাটিং সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরে স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়ে ও অভিভাবকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে অবিভাবক ও এলাকাবাসী স্কুলে এসে ওই শিক্ষক ও শিক্ষিকাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত ও চাকুরীচুত্য করার দাবি জানিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির উপরে চাপ প্রয়োগ করে। পরে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে ম্যানেজিং কমিটির সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এবিষয়ে তোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাশিম মিয়া বলেন, ম্যানেজিং কমিটির বৈঠকে সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে অভিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা,এমন প্রশ্নের কোনো জবাব তিনি দেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী বলেন, এলাকার সামজিক কোন্দল থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। আসমা খাতুন ধর্মীয় শিক্ষক, সে এমন কাজ করতে পারে বলে আমার মনে হয়না। সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। সামনে সপ্তাহে স্কুলে গিয়ে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।