ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে পানের হাটে বিক্রেতাদের নির্ধারিত টোল ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় পানচাষীরা।
গত শনিবার বিকাল ৫টায় উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের ভবানীপুর পান হাটের কালীতলায় এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে মনোহরদীয়া ইউনিয়নের কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গাজীপুর গ্রামের মোঃ আলম হোসেনসহ অংশ গ্রহণকারী পান চাষিরা বলেন, ভবানিপুর পান হাটে নিদিষ্ট হারে টোল আদায় করার পরেও কৃষকদের নিকট থেকে শতকরা ৫টাকা হারে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। যা দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে।
প্রতিবাদ জানালে ব্যাপারিরা পান কেনা বন্ধ করে দেয়। আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। এ ব্যাপার অভিযোগ দিলে ২০০৬ সালে কয়েকজন ব্যাপারীর জেল জরিমানা হয় এবং কিছু দিনের জন্য এই অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ ছিল।
পরে আবার পান ব্যাপারী কাসেম, খলিল, রজন, সুমন দে, ঝন্টু, সুজিত কুমারের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট করে আবার অতিরিক্ত ৫% আদায় শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার পান হাটের হাটের সরকারি ভ্যাটসহ ডাক হয়েছে ৩১ লাখ টাকা। সপ্তাহে প্রতি দিন হাট বসে এবং দিনে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার পান বিক্রয় হয়। তাছাড়া পানের ভরা মৌসুমে এ বিক্রির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়।
অত্র এলাকার কৃষকরা আরো জানান ঝিনাইদহ সদরে আরো পান হাট আছে। সেখানে ১০ হাজার টাকার পান বিক্রয় করলে শুধু ৩০ টাকা খাজনা লাগে, ঝিনাইদহ, হলিধানী, জালালপুর, বিন্নী পান হাট সহ আরো বিভিন্ন জায়গায় পানের হাট গুলো রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে না।
কিন্তু ভবানীপুরসহ হরিণাকুণ্ডুর জোড়াদহ ও আমের চারা পান হাটে ১০ হাজার টাকার পান বিক্রয় করলে খাজনা ২০ ছাড়াও ৫ টাকা জোরপূর্বক ব্যাপারীরা আদায় করে। এই অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধের দাবিতে কৃষকদের পক্ষে স্থানীয় কৃষক বীর বসির আহম্মেদ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন।
এব্যপারে জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা গোলাম মারুফ খান জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের নেতৃত্বে বাজার মনিটরিং কমিটি আছে তারাই এসব দেখভাল করেন, তবে পান হাটে অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে অবশ্য সেটা অন্যায় এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাহেরহুদা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মুঞ্জুর রাশেদ বলেন ব্যাপারীরা অতিরিক্ত আদায় করলেও দীর্ঘদিন ধরে এটা প্রচলিত রয়েছে হঠাৎ বন্ধ করতে গেলে বাজারের উপরে প্রভাব পড়বে। তবে ব্যাপারটি সুরাহা করা যায় কিনা আমি ঢাকা থেকে ফিরে এসে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে চেষ্টা করবো।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম বলেন, বিষয়টি আমি জানি। শোনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। এটি যেন বন্ধ হয় তার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।