ছিলোনা কোন নিজস্ব ভূমি কিম্বা ঘরবাড়ি। কখনো কেটেছে রাস্তার খাদে কখনোবা পরের জায়গায়। এখন তারা পেলেন ভূমি ও পাকা ঘর। এ যেন স্বপ্নের মতো।
রবিবার দুপুরে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমির দলিল ও ঘরের চাবি বুঝে পেলেন উপজেলার ৪০টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবার।
সকাল ১১ টায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গনভবন থেকে সারাদেশে ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে সেমি-পাকা ঘর হস্তাান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর দুপুরে উপজেলার ৪০ জন ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় ছিন্নমূল এসব পরিবারের হাতে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন ও ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতান এসব গৃহহীন পরিবারের হাতে দলিল ও চাবি তুলে দেন।
উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামের বিধবা চায়না খাতুন (৫০) ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন “কোনদিন ভাবিনি নিজের একটি ঘর হইবো, তাও আবার পাকা ঘর। সারাজীবন ক্যানেলের পাশে সরকারি জায়গায় ঘুপচি ঘর তুইলা বাস করছি। এখন শেখের বেটি আমাগো ঘর দিছে, কি যে খুসি লাগতেছে তা কইতে পারুম না। খাই না খাই এখন পাকা ঘরে আরামে শান্তিতে ঘুমাইতে পারুম। আল্লাই শেখের বেটি হাসিনা কে বাঁচায় রাখুক। শুধু চায়না খাতুন নয় তার মতো ঘরের চাবি ও জমির দলিল হাতে পেয়ে অনুভুতির কথা ব্যক্ত করেন। অসহায় ভূমিহীন-গৃহহীন আনেছা খাতুন, আরা খাতুন, আবু তাহের, নাজমুল, শ্যমল কুমারসহ ৪০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা।
আনেছা খাতুন নামে এক অসহায় নারী তার অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ছিলাম রাস্তার ভিখারি এখন হলাম লাখপতি, মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন চালাতাম, নিজের কোন মাথাগোঁজার ঠাই ছিলোনা। কোনদিন স্বপ্নেও ভাবিনি এমন একটা পাকা ঘর পাবো। চায়না, আনেছাদের মতো ঘর পাওয়া সবাই এভাবেই তাদের অনুভুতি ব্যক্ত করেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় হতে প্রাপ্ত অর্থ থেকে প্রথমে ৩০ টি ও পরে আরও ১০টিসহ মোট ৪০ টি পরিবারের হাতে আজ এই জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী ভূমি কমিশনার ভূমি রাজিয়া আক্তার চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্যের প্রতিনিধ রওশন আলী, পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেন, ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা, প্রেসক্লাব সভাপতি এম সাইফুজ্জামান তাজু, পিআইও জামাল হোসাইন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহিউদ্দিন মাষ্টারসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, সাংবাদিক ও উপকারভোগীরা।