নিজ দল বিএনপি নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। এর আগে শমসের মুবিন চৌধুরী একাধিকবার গণমাধ্যমে কথা বলে তাদের দলে না থাকতে পারার বিষয়গুলো সামনে এনেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দল হিসেবে এটা বিএনপির ব্যর্থতা।
আজ বুধবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন হাফিজ উদ্দিন। আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলেও ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আগামী যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে সে নির্বাচনে শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমার পক্ষে অংশগ্রহণ করা সম্ভব না। তবে আমি মনে করি, বিএনপির এই নির্বাচনে যাওয়া উচিত। দলটিতে অসংখ্য ত্যাগী নেতাকর্মী রয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া উচিত ছিল বলেও তিনি মনে করেন।
এসময় তিনি যে অভিযোগগুলো তুলে ধরেন তা হলো-জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে বিএনপি ক্ষমতার বাহিরে, বিএনপিতে সত্যি কথা বলার মতো লোক নেই, চেয়ারপারসনের সামনে কোনো নেতা ইয়েস স্যার, রাইট স্যার বলা ছাড়া আর কোনো কিছু জানেন না। এসময় তিনি দাবি করেন, বিএনপিতে একনায়কতন্ত্র, কমিটি বাণিজ্য চলছে। এভাবে দল চলতে পারে না।
এদিকে গত সেপ্টেম্বরে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (বহিষ্কৃত) অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে তৃণমূল বিএনপিতে স্বাগত জানান দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্তরা সেলিমা হুদা। শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকারকে স্বাগত জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্তরা সেলিমা হুদা সেসময় বলেন, আমি আশা করি, তাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এ দল আরও গতিশীল হবে। তাদের এ যোগদান তৃণমূল বিএনপি তথা আমার প্রয়াত বাবার দেশ গড়ার প্রত্যয় আরও এগিয়ে যাবে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে পররাষ্ট্র-সচিব ছিলেন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি একসময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি অবসরে যান। ২০০৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০০৯ সালে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হন। ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দেন ও প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। এবং সেখান থেকেও তিনি বেরিয়ে আসেন।
এদিকে আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে দলে যোগ দিলেন বিএনপির সাবেক জনপ্রতিনিধি ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন পরিচিত মুখ। বিএনপি ছেড়ে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। যোগ দিয়েই তারা দলটির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় মনে করেন কোন বিবেকবান মানুষ তারা যতই কোনো দলের সাথে থাকুক, যখন দেখা যায় দলটি মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে তখন তারা সেই দলে থাকতে পারবে না। এমনকি তারা বিএনপির জোট নিয়েও ভীতসন্ত্রস্ত। নেতাদের ধারণা, জোটের কারণে তারা থাকতে পারবে না। লক্ষ্য করে দেখবেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের মতো নেতারা একসময় তারেক রহমানের শাসনামল মানবে না। যেভাবে হ্যান্ডমাইক ধরায়ে দিয়ে তাকে দিয়ে হরতাল অবরোধের ডাক দিতে বাধ্য করা হলো, এই নেতারা কীভাবে দলে থাকবেন?