মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের ক ইউনিটের সভাপতি আলী আজগরের বিরুদ্ধে এলাকার নিম্নবিত্ত মানুষদের টার্গেট করে বিভিন্ন কায়দায় অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও তার তৈরি স্বঘোষিত গ্যাংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। আজগরের গ্যাং সদস্য হিসেবে কাজ করছে এলাকার বেশ কিছু বখাটে যুবক।
এলাকার নিম্নবিত্ত পরিবারকে টার্গেট করে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে সালিশের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এই গ্রুপের কাজ।
স্থানীয়দের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন কিছু ভুক্তভোগী ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন কায়দায় ফাঁদে ফেলে আমাদের নামে সালিশ বসিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বাদি বিবাদি কেউই সেই টাকার কোন অংশ পাইনি। পুরোটাই আজগর ও তার গ্রুপের সদস্যরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে।
ভাটপাড়া গ্রামের নরুল ইসলাম এর নাতী ছেলে রাজিবুল ইসলামকে বিদেশ পাঠানোর নামে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় আজগর। সেই টাকা দেওয়ার স্বাক্ষর করা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পটি নুরুল ইসলামের কাছে থেকে জোর করে কেড়ে নেন আলী আজগর। পরে এ নিয়ে গাংনী থানায় একটি মামলাও হয়। সেই টাকা এখনো ফিরে না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
কসবা গ্রামের সেলুন দোকানদার শ্রী লালচাঁদ দাসকে গ্রাম পুলিশের চাকরি দেওয়ার নামে তার কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়। পরে চাকরি না দিতে পারলে টাকা ফেরত চাইলে উল্টো তাকেই মামলার ভয় দেখিয়ে থামিয়ে রাখে।
রাজনীতিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এলাকার বেশ কিছু নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করারও অভিযোগ উঠেছে আজগারের বিরুদ্ধে। সেই মামলা থেকে রেহাই পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আজগর গ্রুপ।
ভাটপাড়া গ্রামের জাকারিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে একটি মিথ্যা নাশকতা মামলায় হয় আজগরের ইশারায়। সেই মামলায় পুলিশ দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করা হয়। মাঝে মাঝে বেশ কিছু টাকা আমার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে আজগর।
ভাটপাড়ার জামিরুল, সুলতান ও তানছের আলীর সাথে আজগর চাঁদাদাবি করে। সেই চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তাদের বিরুদ্ধে বোমা হামলার মিথ্যা মামলা দেয় আজগর এ অভিযোগ তাদের।
এছাড়াও ভুক্তভোগী অনেকেই আছেন যারা আজগর গ্রুপের সদস্যদের ভয়ে মুখ খোলে না। এলাকায় আধিপাত্য বিস্তার ও ত্রাসসৃষ্টির জন্য অস্ত্রধারী বাহিনীকে কাজে লাগায় আজগর।
ধানখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান মোবাইল ফোনে জানান, আজগরের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চাইনা না। যদি কেউ কিছু বলে তাহলে আর জান থাকবে না। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি। ক্ষমতার দাপটে এলাকায় সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা করা মুশকিল।
এ বিষয়ে আলী আজগর বলেন, আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি আজগরের অপকর্মের কথা শুনেছি। আমাদের কাছে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করিনি। অভিযোগ পেলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।