হোটেল আটলান্টিক কাণ্ড মামলার তদন্তে প্রাপ্ত সরাসরি জড়িত নাজনীন খান প্রিয়ার সহযোগী ক্যামেরা ম্যান এবং তার কথিত বয়ফ্রেন্ড শাহজাহান আলী ওরফে বেতার (২৪) কে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত শাহজাহান আলী মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর পূর্বপাড়ার এসকেন আলীর ছেলে।
মঙ্গলবার ডিবির একটি টিম ঢাকার রুপনগর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে মেহেরপুরে নিয়ে আসে। পরে গতকাল বুধবার বিকালে মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: তারিক হাসানের আদালতে হাজির করা হলে। বিজ্ঞ বিচারকের খাসকামরায় শাহজাহান আলী ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
আসামী শাহজাহান তার জবানবন্দিতে আটলান্টিক হোটেলে অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারন করে ব্লাকমেইলিং করে চাঁদা দাবি ও আদায়ের কথা স্বীকার করে এবং তার সহযোগী অপরাপর আসামীদের নাম উল্লেখ করে।
ডিবির ওসি সাইফুল আলম জানান, মামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করা হয়। মামলাটি গভীর তদন্তের স্বার্থে প্রকাশিত সহযোগী অন্যান্যদের নাম উল্লেখ করা সম্ভব হলো না।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২২ নভেম্বর মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের মনোয়ার হোসেন নামের এক এনজিও কর্মীর সদর থানায় নারী চক্রের প্রধান হোতো প্রিয়া খানকে আসামি করে দণ্ডবিধির ৪১৭/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারায় একটি মামলা করেন। যার মামলা নম্বর-৩২। মামলার দিন রাতেই শহরের হোটেলবাজার এলাকার ভাড়া বাসা থেকে প্রধান আসামি নাজনীন খান প্রিয়াকে আটক করে পুলিশ। পরে মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিবি মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করে। তদন্তে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
তদন্তের অংশ হিসেবে ৩০ নভেম্বর রাতে হোটেল আটলান্টিকায় অভিযান চালিয়ে অর্থ আদায় চক্রের হোতা মেহেরপুর শহরের অভিজাত হোটেল আটলান্টিকার মালিক মতিয়ার, মতিয়ারের ছেলে মামুন ও ছন্দা খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ছন্দা খাতুন আদালতে জবানবন্দিতে চক্রের মূল হোতা হিসেবে চার সাংবাদিক ও এক আইনজীবীকে অভিযুক্ত করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে।
এ নিয়ে গত ১ ডিসেম্বর মেহেরপুর প্রতিদিনে প্রধান শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে মেহেরপুরসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে তোলপাড় ফেলে দেয়। এই মামলায় ইতোমধ্যে চার সাংবাদিকের মধ্যে মিজানুর রহমান জনিকে শোন এ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। তিনি মেহেরপুরে জেলা কারাগারে হাজত বাস করছেন। এছাড়াও হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ড মামলায় শাহজাহান আলীকে দিয়ে পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়ে এ পর্যন্ত ৮ আসামি কারাগারে হাজত বাস করছেন। জবানবন্দিতে অভিযুক্ত বেশ কিছু আসামি পলাতকও রয়েছে।