এক রোমাঞ্চকর রাত, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটের লড়াইয়ে টিকে থাকতে দ্বিতীয় লেগের দুটি ম্যাচে মুখোমুখি চারটি দল। যেখানে এক খেলায় লড়েছে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা ও নাপোলি। আরেক খেলায় মুখোমুখি হয়েছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব আর্সেনাল ও পর্তুগালের ক্লাব পোর্তো। দুটি ম্যাচেই লড়াই হয়েছে সমানে সমানে। তবে বার্সার থেকে তুলনামূলক খানিকটা কম শক্তির লেগেছিল নাপোলিকে তাই কোনো রকম প্রতিরোধ গড়তে পারেনি কাতালানদের সামনে, তাতে তিন মৌসুম পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে উঠেছে বার্সেলোনা।
তবে জমজমাট লড়াই হয়েছে পর্তো আর আর্সেনালের মধ্যে। শেষ অবধি ঐ খেলাটা গড়িয়েছিল টাইব্রেকার অবদি। সেখানে গোলপোস্টে দাঁড়িয়ে পর্তোকে একাই রুখে দেন গানারসদের স্প্যানিশ গোলরক্ষক ডেভিড রায়া। আর তার কল্যাণেই ১৪ বছর পর ফের একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে নিজেদের জায়গা পাকা করতে পেরেছে আর্সেনাল।
মঙ্গলবার ঘরের মাঠে নাপোলির বিপক্ষে খেলতে নেমে ৩-১ গোলে জয় পায় বার্সা। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলের অগ্রগামিতায় তারা পৌঁছে যায় কোয়ার্টার-ফাইনালে। এই ম্যাচে বার্সার হয়ে একটি করে গোল করেন ফেরমিন লোপেজ (১৫), জোয়াও কানসেলো (১৭) ও রবার্ট লেভানডোভস্কি (৮৩) মিনিটে। পুরো ম্যাচে গোলের জন্য ২৪টি শট নিয়ে ১০টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা। নাপোলির ১৪ শটের ৪টি লক্ষ্যে ছিল। এতেই বোঝা যায় মধ্য মাঠ আর আক্রমণ ভাগে বেশ শক্ত অবস্থানে ছিল কাতালানরা। তবে তাদের ছাড়য়ে এদিন ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছে বার্সার তরুণ এক ডিফেন্ডার যার কিনা এই ম্যাচ দিয়েই হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেক।
১৭ বছর ৫০ দিন বয়সে গত পরশু রাতে বার্সার হয়ে মাঠে নামেন পাউ কুবারসি। বয়সের তুলনায় পারফরম্যান্স করেছেন বিচক্ষণতার সঙ্গে। নাপোলির আক্রমণভাগকে খুব একটা সুবিধা করতে দেননি যিনি। বিশেষ করে, সবচেয়ে বড় হুমকি হওয়ার কথা ছিল যার, সেই ফরোয়ার্ড ভিক্টর ওসিমেনকে তিনি একরকম অকার্যকর করেই রাখেন। আর এমন পারফর্ম করার আগেই তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে অভিষিক্ত সর্বকনিষ্ট ডিফেন্ডার হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল ডেভিড আলাবার দখলে তিনি বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ১৭ বছর ২৫৮ দিন বয়সে মাঠে নেমেছিলেন।
অবশ্য রাতের অন্য ম্যাচটি ছিল আরো জমজমাট। ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে পোর্তোকে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়েছে আর্সেনাল। দুই লেগের ফল ১-১ থাকায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। আর তাতেই ১৪ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে মিকেল আর্তেতার দল। শেষবার ২০০৯-১০ মৌসুমে গানারসরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল।
তবে এসব কিছুকে ছাঁপিয়ে ম্যাচ শেষে আলোচনায় ছিল দুই কোচের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়। পরে এ বিষয়ে আর্সেনালের কোচ মিকেল আর্তেতাতের ওপর অভিযোগ তোলেন পর্তোর কোচ কনসেইসাও, জানান তার পরিবারকে অপমানজনক কথা বলেছেন আর্তেতা। যদিও এটি পর্তুগালের এই কোচের স্বাভাবিক অভিযোগই। কেননা এর আগেও বেশ কয়েকবার বিভিন্ন কোচের বিরুদ্ধে কনসেইসাওকে এই অভিযোগ তুলতে দেখা গিয়েছিল। যদিও পরে আর্সেনাল সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানায়, এই অভিযোগ জোর দিয়েই অস্বীকার করেছেন আর্তেতা।
সূত্র: ইত্তেফাক