এম এফ রুপক:
ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই উৎসবের আগমনী বার্তা তাই প্রকৃতিজুড়ে। বসন্তকে বরণ করে নিতে যেমন চাই রঙিন ফুল, তেমনি ভালোবাসার দিনে একটি লাল গোলাপ প্রিয়জনের হাতে তুলে দেওয়াও তো চাই! বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন! তাই বছরজুড়েই থাকে ফুলের চাহিদা। তবে একদিন পরেই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আসন্ন বসন্তবরণ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নানা জাতের নানা রঙের ফুলে সেজেছে মেহেরপুরের দোকান গুলো।
উৎসবের এই মাসে তাই ফুল ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। মেহেরপুরবাসীর ফুলের চাদিহা পুরণে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। এই তিন উৎসবকে কেন্দ্র করে মেহেরপুরে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট ব্যবসায়ীদের। তবে গতবারের তুলনায় ফুলের দাম দ্বিগুন হওয়ায় ক্রেতাদের সাড়া কেমন পাবে এ নিয়ে কিছুটা শঙ্কাতেও আছেন ব্যসায়ীরা। এদিকে ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে মেহেরপুরের বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে অস্থায়ী ফুলের দোকান।
বিশেষ করে মেহেরপুরের দর্শনীয় স্থান গুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এইসব দোকান। মেহেরপুর জেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে প্রায় ২০টির মত ফুলের দোকান আছে। দোকানগুলো সাজানো হচ্ছে বাহারী সব ফুল দিয়ে। এই সব ফুলের মধ্যে রয়েছে, গোলাপ, রজনীগন্ধা, গেলোডিলাক্স, জার্বেরা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, জীবসি। তবে ভালোবাসা দিবসে সব চেয়ে বেশি চাহিদা থাকে গোলাপের।
মেহেরপুরের ফুলের খুচরা দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর ফুল বিক্রি পরিমাণে বেশি হবে বলে তারা আশা করছেন।
পহেলা ফালগুন ও ভালোবাসা দিবসে ফুলের দাম কেমন থাকতে পারে জানতে চাইলে শাহবাগ স্বার্নালী ফুল ঘরের মালিক রাশেদউজ্জামান বলেন, প্রতিটি দেশি গোলাপের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা, জারবেরা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গ্লাডিওলাস ২০ টাকা ও রজনীগন্ধা ১০-১৫ টাকা, জুঁই-বেলী মালা ৫০ টাকা, গাঁদা ফুলের মালা ২০-৩০ টাকা, লিলি ২০০ টাকা, থাই-চায়না ও ইন্ডিয়ান গোলাপ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, অর্কিড ৮০ টাকা, কিসিমসিমা মিম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, জারবেরা ৪০ টাকা, জিপসি ৫০ টাকা পর্যন্ত থাকবে।
মেহেরপুর বড় বাজারের টুটুল ফুল ঘরের টুটুল বলেন, এবছর আমরা করোনা নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। তবে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ায় আশা জাগিয়েছে। তাই ফুল বিক্রির বিষয়ে আমরা বিশেষ আশাবাদী। এবার আমি প্রায় লাখ খানেক টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।
ফুলের চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. সামসুজ্জোহা পার্কের সামনে ইত্যাদি ফুল ঘরের স্বত্তাধীকারী বকুল বলেন, বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস মানেই গোলাপ। সবাই চায়না রেড গোলাপ বেশি পছন্দ করে। এছাড়াও দেশি লাল ও সাদা গোলাপের চাহিদাও আছে। কেউ কেউ আবার অন্যান্য ফুল যেমন, রজনীগন্ধা, গাঁদা, গেলোডিলাক্স দিয়ে তোড়াও তৈরি করে নেয়।
মুজিবনগরের সবুজ ফুল ঘরের মালিক সবুজ বলেন, অস্থায়ীভাবে ফুলের দোকান দিয়েছি। ভালোবাসা দিবসে মেহেরপুরের মুজিবনগরে সব থেকে বেশি দর্শনার্থী আসেন বেড়াতে। আশা করছি ভালোবাসা দিবসে প্রায় এক লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবো।
কথা হলো বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে ফুল কিনতে আসা ভবের পাড়ার স্বার্নালী মন্ডল ও নিলিমা মন্ডল জানালেন, মাথায় পরার জন্য এবার নিজেই ফুল কিনে বানিয়ে নেবেন রিং। তবে ফুলের দাম নিয়ে অসন্তুষ্ট ক্রেতাগণ। ক্রেতাদের অভিযোগ বিশেষ দিবসতো বটেই, পুরো ফালগুন মাস জুড়েই বেশি থাকে ফুলের দাম।