৬শ’ বস্তিবাসীকে ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী উপকারভোগীদের কাছে ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর করেন। শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় বস্তিবাসীদের ফ্ল্যাট দেয়া হলো।
কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষে এই ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ২০টি পাঁচতলা ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জলবায়ু উদ্বাস্তু ৬০০ পরিবারকে ফ্ল্যাট দেয়া হয়েছে। বৃহৎ এ প্রকল্পে পর্যায়ক্রমে ৪ হাজার ৪৪৮টি পরিবার ফ্ল্যাট পাবে।
১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছাসে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মহেশখালী কুতুবদিয়াসহ উপকূলের বিশাল এলাকা সমুদ্রে বিলীন হয়ে যায়। এতে গৃহহারা হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। এসব মানুষ জীবনের তাগিদে আশ্রয় নেয় কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দরের পশ্চিমে বালিয়াড়ী ও ঝাউবাগান এলাকায়,যা পরবর্তীতে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হয়। যেখানে বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করছে।
বিমানবন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবদিয়া পাড়া, নাজিরাটেক এবং সমিতি পাড়া এলাকার বিপুল পরিমাণ ভূমি অধিগ্রহণ করে সরকার। অধিগ্রহণের আওতায় পড়া জমিতে ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবার বাস করত। ২০১১ সালে ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে এক জনসভায় এসব উদ্বাস্তু পরিবারের জন্য পুনর্বাসনের নির্দেশনা দেন। পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে গ্রহণ করা হয় খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প’। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রথমে ৫ তলাবিশিষ্ট ১৯টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আরও ভবন নির্মাণ করা হবে, যেখাবে ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারের পুনর্বাসন করা হবে।
উল্লেখ্য, দেশে এটিই প্রথম সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধিক বাজেটের আশ্রয়ণ প্রকল্প। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে প্রায় ২৫৩ দশমিক ৩৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পে ১৩৯টি ৫ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। যার মধ্যে শেখ হাসিনা টাওয়ার নামে একটি ১০ তলা বিশিষ্ট সুউচ্চ ভবনও থাকবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ২০১৭ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের বাকি ভবনগুলোর কাজও এগিয়ে চলছে। সূত্র- যুগান্তর